
এ. সাইদ :
দেশের ইলেকট্রিক পণ্য উৎপাদন এবং বিপণনকারীদের সবচেয়ে বড় এবং ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ইলেকট্রিক এসোসিয়েশনের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে নবনির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ স্থগিত করেছে বাণিজ্যয় মন্ত্রণালয়। জাল ভোটের কারণে এ স্থগিতাদেশ দিয়ে নির্বাচন বোর্ডের সভাপতির কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।
জানা গেছে, সংগঠনটির ভোটার নং ১২২৩ মো. জাকির হোসেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সরেজমিন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
পরিচালক, বাণিজ্য সংগঠন ও যুগ্ম সচিব মো. আবদুল মান্নান কর্তৃক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ইলেকট্রিক এসোসিয়েশনের ২০১৫-২০১৬ মেয়াদী নির্বাচন বিগত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রত্যয়নকৃত ৪৪৮টি ফেব্রিকেটেড, ২৭০টি ইনভেলিড টিআইএন নম্বর এবং ১৮টি ভূয়া ট্রেড লাপইসেন্স ব্যবহার করে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিধি মোতাবেক ১ জানুয়ারি ২০১৫ থেকে প্রশাসক নিয়োগের কথা উল্লেখ করে শপথ স্থগিতের ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিদের্শনায় বলা হয়েছে, ১৫ ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচিত পরিষদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বাণিজ্য সংগঠন অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর ৯ (২) (চ) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এতদ্বারা স্থগিত করা হল।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনের আগে নতুন ভোটার তালিকায় অপরিচিত কিছু মুখ সবার নজরে আসে। এরা সবাই নবনির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠদের ঘণিষ্ঠ এবং তারা নিজেরাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে এদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। ফলে এদের ব্যাপারে নির্বাচনের আগেই কয়েকজন প্রার্থী এ বিষয়ে অভিযোগ করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে। অভিযোগের ভিত্তিতে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা যাচাই বাছাই করে ৪৪৮টি ফেব্রিকেটেড, ২৭০টি ইনভেলিড টিআইএন নম্বর এবং ১৮টি ভূয়া ট্রেড লাপইসেন্স ব্যবহার করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির তথ্য পান।
ভোট গণনা নিয়ে টালবাহানা
নির্বাচনের আগেই গুঞ্জন ছিল নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদের অনিয়ম নিয়ে। তার প্রতিফলন ঘটে নির্বাচনের দিন। ভোট গ্রহণ ১৫ ডিসেম্বর বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ হলেও গণনা করতে দেয়া হয়নি। শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বিপক্ষ গ্রুপের প্রার্থীরা ১৫ ডিসেম্বর রাতেই ভোট গণনার দাবি জানালেও নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক তাতে কর্ণপাত করেন নি। পরে ১৬ তারিখ সকাল ৯টায় ভোট গণনার কথা ঘোষণা করলেও গণনা শুরু হয় দুপুরের পর। একাধিকবার ভুল গণনার অজুহাত দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত ওইদিন গভীর রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
ফলাফল অনুযায়ী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে জেনারেল গ্রুপ থেকে ৭ জন এবং এসোসিয়েট গ্রুপ থেকে ৫ জন নির্বাচিত হন। অন্যদিকে শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে জেনারেল গ্রুপ থেকে ৫ জন এবং এসোসিয়েট গ্রুপ থেকে ৪ জন নির্বাচিত হন।
সংখ্যাগরিষ্ঠরা জেনারেল গ্রুপ থেকে মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদকে প্রেসিডেন্ট, মো. নজরুল এহসানকে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং এসোসিয়েট গ্রুপ থেকে মো. মামুনুল হাসান পলাশকে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন।
পাঠকের মতামত